Trump's Declaration, the Al-Aqsa Mosque's City Jerusalem as the capital of Israel and the Crisis of the Human Civilization (in Bengali)

 ট্রাম্পের ঘোষণা ও সভ্যতার সংকট 



Prophet Hazrat Muhammad (SAW.) went Miraj from the Holy Al-Aqsa Mosque. The Jerusalem city is the holy place for the Jews, Christians and Muslims.

                        বর্তমান বিশ্ব মানব ইতিহাস সর্বাপেক্ষা কঠিনতম সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছে । সংক্ষেপে একে বলা চলে সভ্যতার সংকট । একথা বলার অর্থ মানব সভ্যতা দুটি বিশ্বযুদ্ধের স্বাক্ষ্য , এখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহড়া চলছে , যদিও সেটা আমাদের কাম্য নয় । উভয় বিশ্বযুদ্ধেই সম্পদ ও জীবনহানীর ঘটনা ছিল ভয়াবহ । প্রথম বিশ্বযুদ্ধে (১৯১৪-১৯১৮) প্রায় ১ কোটি লোক নিহত এবং ৩.৫ কোটি লোক আহত হন , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) ৫.৫ কোটি লোক নিহত এবং ৮ কোটি লোক আহত হন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কেবলমাত্র আমেরিকা যুক্তরাট্রের হাতে পরমাণু বোমা ছিল এবং ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ই ডিসেম্বর জাপান পার্ল হারবারে অবস্থিত আমেরিকার নৌঘাঁটি বোমারু বিমান হামলায় ধ্বংস করে দেয় । এর পরিনাম স্বরূপ আমেরিকা ১৯৪৫ সালের ৬ই আগস্ট জাপানের হিরোশিমাতে বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম পরমাণু বোমা 'লিটল বয়' এবং ৯ই আগস্ট নাগাসাকিতে দ্বিতীয় পরমাণু বোমা 'ফ্যাট ম্যান' নিক্ষেপ করে । ফলে মুহূর্তের মধ্যে প্রায় ২ লক্ষ লোক নিহত এবং ৪ লক্ষ লোক আহত এবং বিকলাঙ্গ হন । এখনও সেখানে পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তার দরুন বিকলাঙ্গ শিশু জন্মাচ্ছে , কৃষিজমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে । আর বর্তমনে ঘোষিত এবং অঘোষিত বেশ কিছু দেশের হাতে পরমাণু বোমাসহ গনবিধ্বংসী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্র , যুদ্ধ বিমান , নৌবহর , ট্যাঙ্ক ও নানাবিধ বোমা এবং মারণাস্ত্র মজুত আছে । এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়া ও আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনার পারদ চরমতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে । উত্তর কোরিয়া ইতিমধ্যে গনবিধ্বংসী শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা ফাটিয়েছে আর উপর্যুপরি পারমাণুঅস্ত্র বহনকারী দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপে সফলতা লাভ করেছে । তাছাড়া এখন কয়েকটা মুসলিম দেশের হাতেও পরমাণু অস্ত্র আছে । একথা বাস্তব সত্য সন্ত্রাসদমন সহ বিভিন্ন অজুহাতে আমেরিকার নেতৃত্বে বিগত কয়েক দশক ধরে খনিজ তেল সমৃদ্ধ এবং গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থানগত বিভিন্ন মুসলিম দেশের উপর জঘন্যতম হামলা চালিয়ে ৭ থেকে ৮ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং সেইসঙ্গে স্কুল , কলেজ , মাদ্রাসা - মসজিদ , হসপিটালসহ প্রভূত সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে । এবং এই মারণখেলা এখনও চলছে । উল্লেখ্য ইসলাম 'সন্ত্রাস'কে সমর্থন করে না - ইসলাম মানে 'শান্তি' । কোরআনে বলা হয়েছে কেউ যদি অন্যায় ভাবে কোনো মানুষকে খুন করে , তবে সে সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করলো , আর কেউ যদি কারো প্রাণ রক্ষা করে তবে সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করলো । ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপন কারীদের প্রতি কোরানের ঘোষণা হল 'সৎ কাজের আদেশ আর অসৎ কাজের নিষেধ'সহ ভাষা - ধৰ্ম - বর্ণ - গোত্র নির্বিশেষে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান । কিন্তু গভীর পরিতাপের বিষয় ভিত্তিহীন ইসলামোফোবিয়ায় আতংকগ্রস্থরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিমদের উপর সীমাহীন অন্যায় , অত্যাচার , জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে । কখনো মুসলিমদের সন্ত্রাসবাদী হিসাবে চিহ্নিত করে আক্রমণ করা হচ্ছে , কখনো মুসলিমরা অনুপ্রবেশকারী হিসাবে আক্রান্ত হচ্ছেন , কখনো তারা 'লাভ জিহাদ' নামক পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন আবার কখনো তারা গো - হত্যাকারি হিসাবে আক্রান্ত হচ্ছেন । সম্প্রতি ২৫শে আগস্ট ২০১৭তে শুরু হয় পৃথিবীর ইতিহাসের এক জঘন্যতাম পৈশাচিক নরহত্যা লীলা , ধর্ষণ , নারী - শিশু - বৃদ্ধ নিধনযজ্ঞ ; যার নেতৃত্বে ছিল মায়ানমার সরকার সেনাবাহিনী  এবং সেখানকার নরাধম উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষু বা সন্যাসীবৃন্দ । আর এসবের শিকার হয় হতভাগ্য আরাকানবাসী রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ । কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও লজ্জার বিষয় আজও পর্যন্ত মায়ানমারের বিরুদ্ধে কোন সামরিক অভিযান তো দূরের কথা বলিষ্ট গণতান্ত্রিক পদক্ষেপ পর্যন্ত গ্রহণ করা হলো না । যেখানে মায়ানমারের রাখাইন (পূর্বতন আরাকান) প্রদেশে তিন হাজারের বেশি মুসলিমকে হত্যা করা হলো , প্রায় নয় লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হলো , সেখানে সমরাস্ত্রের ফেরিওয়ালা আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনো পদক্ষেপ নিলেন না । যারফলে সারাবিশ্বের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষসহ বিশ্বের ১৬০কোটি মুসলিম প্রচন্ডভাবে ক্ষুব্ধ । এমতাবস্থায় আমেরিকার রাষ্ট্রপতি কুখ্যাত ট্রাম্প তাৎপর্যপূর্ণভাবে ৬ই ডিসেম্বর অর্থাৎ ভারতের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধূলিস্যাৎ করার তারিখে , মুসলিম ইতিহাসের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ আল - আকসার শহর জেরুজালেমকে দুম করে পৃথিবীর অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করে দিলেন । এই কুখ্যাত ট্রাম্প ইতিপূর্বে ভোটে জেতার পর ইরান , ইরাক , লিবিয়া , সিরিয়া , ইয়েমেন , আফগানিস্তান সহ সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন । এইরকম অমানুষিকতার নজির বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় নেই । শুধু এরূপ উপমা একটু পাওয়া যায় চিরস্মরণীয় ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের 'সভ্য ও অসভ্য' গল্পে । রাষ্ট্রসংঘের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে একথা বলা যায় বিশ্বের কোনো মুসলিম কুখ্যাত ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে নেবেন না । সমগ্র মুসলিম বিশ্ব আজ উত্তেজনায় ক্ষোভে টগবগ করে ফুটছে এবং এর পরিনাম যে ভয়াবহ হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । আর এর সমাধান নিহিত আছে ভবিষ্যতেরই গর্ভে ।।

Subscribe to my Blog . Follow me on Twitter and get recent updates.

Comments

Popular posts from this blog

Solution To Rohingya Crisis

ANTI-MUSLIM RIOTS, AN ON GOING PROCESS OF COMMUNAL INDIA TO FACE

What's Modi's Thinking and Reality ?